নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই স্বাভাবিক হচ্ছে নগরজীবন। সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, ছোট-বড় মার্কেট, শপিংমলসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক সময়ের মতো কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে করোনা ভয়কে উপেক্ষা করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে মানুষ। আগামী মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলছেন, করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে। কমে যাচ্ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বেশিরভাগ রোগী বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার ৮৬৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে মারা গেছেন ৫১৪ জন। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন দুই হাজার ৪৫৭ জন আক্রান্ত এবং ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত মাসে অর্থাৎ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার ৯১৮ জন। এ সময়ে মারা যায় এক হাজার ২১৪ জন। অর্থাৎ ওই মাসে গড়ে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৯৬৫ জন এবং মৃত্যু ৩৯ জন। সে বিবেচনায় চলতি মাসে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমে গেছে-এমন তথ্য প্রচারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় (ঘরের বাইরে বের হলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে ঘনঘন হাত ধোয়া, তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল) প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে। তা না করে আত্মতৃপ্তিতে ভুগলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে উদাসীন। বেশিরভাগ মানুষই মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে চলাফেরা করছেন। বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে ঢুকতে কিছুদিন আগেও জ্বর মেপে ও জীবাণুমুক্তকরণ কক্ষের মাধ্যমে প্রবেশে বাধ্যবাধকতা থাকলেও বর্তমানে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা গেছে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। গতকাল পর্যন্ত ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৫২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক লাখ ৫৭ হাজার ৬৩৫ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ৬২৫ জনের।
Leave a Reply